০৩:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রেমিকের হাত ধরে পালানোর অভিযোগে দুই দিন ধরে বেধে প্রতিবেশী এক নারীকে অমানবিক নির্যাতন

ঢাকা, ভাষানটেক এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী আবুল বাশারের পরিবারের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক নিরীহ প্রতিবেশী নারী। ঘটনার শিকার ওই নারী অভিযোগ করেছেন যে, আবুল বাশারের মেয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাত্রস্থ হতে না চাইলে অন্য এক যুবকের সাথে পালিয়ে যান। আর এই ঘটনার সাথে প্রতিবেশী নারীকে সম্পৃক্ত করে তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন ১। হাবিব, পিতা- মান্নান, ২। খাদিজা, স্বামী- আবুল বাসার, ৩। হায়নুর বেগম, স্বামী- সৈয়দ, ৪। শিখা, স্বামী- শামিম, ৫। জাকিয়া, পিতা- আবুল বাসার। সাং- ১নং বাস্তহারা, মজুমদার মোড়, থানা- ভাষানটেক, ঢাকা।

 

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাত আনুমানিক ১২.৪৫ ঘটিকায়, অভিযুক্তরা তাকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের বাসায় আটকে রাখে। সেখানে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং রাদিয়া নামের তরুণীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ভুক্তভোগী যথাযথভাবে সব তথ্য জানানোর পরও অভিযুক্তরা রাতভর অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরদিনও মারধর করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে রাদিয়ার পছন্দের ছেলের পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

 

এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ভুক্তভোগী ও তার সঙ্গীরা আরও এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। থানার নিচে অবস্থান করার সময় অভিযুক্তদের কয়েকজন স্থানীয় দোকানে হাতুড়ি খুঁজতে থাকে। এতে ভুক্তভোগীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তাদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে এলে তারা তৎক্ষণাৎ ভাষানটেক থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। ওসি সাহেব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং ভুক্তভোগীদের থানার ভেতরে আশ্রয় নিতে বলেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আবুল বাশার ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। তার ছেলেরা কিশোর গ্যাং লিডার, বাশারের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে, কিন্তু প্রশাসনিক কঠোর পদক্ষেপের অভাবে তারা এখনও দাপটের সাথে এলাকায় অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী মনে করেন, যদি প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

ভুক্তভোগীরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমাদের দুই দিন ধরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, আর এখন থানায় এসেছি বলে আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। কত বড় সন্ত্রাসী হলে থানার সামনেই এই কাজ করতে পারে!”

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আবুল বাশারের ইতিহাস ভয়ংকর, তার পরিবারের সদস্যরাও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত। তারা লাঠিসোটা, হাতুড়ি, রড ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। তাদের হাত থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচানোর জন্য কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”

 

এদিকে, নির্যাতনের শিকার নারী জানান, মারধরের ফলে তার প্রসাবের রাস্তায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় আছেন এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে, এই বর্বর নির্যাতনকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন নির্যাতনের শিকার না হন।

হাসনাতের ওপর হামলা, কঠোর হবে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রেমিকের হাত ধরে পালানোর অভিযোগে দুই দিন ধরে বেধে প্রতিবেশী এক নারীকে অমানবিক নির্যাতন

সর্বশেষ আপডেট : ০২:১৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঢাকা, ভাষানটেক এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী আবুল বাশারের পরিবারের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক নিরীহ প্রতিবেশী নারী। ঘটনার শিকার ওই নারী অভিযোগ করেছেন যে, আবুল বাশারের মেয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাত্রস্থ হতে না চাইলে অন্য এক যুবকের সাথে পালিয়ে যান। আর এই ঘটনার সাথে প্রতিবেশী নারীকে সম্পৃক্ত করে তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন ১। হাবিব, পিতা- মান্নান, ২। খাদিজা, স্বামী- আবুল বাসার, ৩। হায়নুর বেগম, স্বামী- সৈয়দ, ৪। শিখা, স্বামী- শামিম, ৫। জাকিয়া, পিতা- আবুল বাসার। সাং- ১নং বাস্তহারা, মজুমদার মোড়, থানা- ভাষানটেক, ঢাকা।

 

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাত আনুমানিক ১২.৪৫ ঘটিকায়, অভিযুক্তরা তাকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের বাসায় আটকে রাখে। সেখানে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং রাদিয়া নামের তরুণীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ভুক্তভোগী যথাযথভাবে সব তথ্য জানানোর পরও অভিযুক্তরা রাতভর অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরদিনও মারধর করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে রাদিয়ার পছন্দের ছেলের পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

 

এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ভুক্তভোগী ও তার সঙ্গীরা আরও এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। থানার নিচে অবস্থান করার সময় অভিযুক্তদের কয়েকজন স্থানীয় দোকানে হাতুড়ি খুঁজতে থাকে। এতে ভুক্তভোগীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তাদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে এলে তারা তৎক্ষণাৎ ভাষানটেক থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। ওসি সাহেব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং ভুক্তভোগীদের থানার ভেতরে আশ্রয় নিতে বলেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আবুল বাশার ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। তার ছেলেরা কিশোর গ্যাং লিডার, বাশারের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে, কিন্তু প্রশাসনিক কঠোর পদক্ষেপের অভাবে তারা এখনও দাপটের সাথে এলাকায় অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী মনে করেন, যদি প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

ভুক্তভোগীরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমাদের দুই দিন ধরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, আর এখন থানায় এসেছি বলে আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। কত বড় সন্ত্রাসী হলে থানার সামনেই এই কাজ করতে পারে!”

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আবুল বাশারের ইতিহাস ভয়ংকর, তার পরিবারের সদস্যরাও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত। তারা লাঠিসোটা, হাতুড়ি, রড ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। তাদের হাত থেকে এলাকাবাসীকে বাঁচানোর জন্য কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”

 

এদিকে, নির্যাতনের শিকার নারী জানান, মারধরের ফলে তার প্রসাবের রাস্তায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় আছেন এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে, এই বর্বর নির্যাতনকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন নির্যাতনের শিকার না হন।