জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার দৃঢ় ইচ্ছা আর পরিশ্রমই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়—এই কথার জীবন্ত উদাহরণ ভুট্টা বিক্রি করে সফল হওয়া তরুণ উদ্যোক্তা মোহাম্মদ ইমরান। চার বছর আগে জীবনের কঠিন বাস্তবতা তাকে বাধ্য করেছিল একটি সহজ পেশা বেছে নিতে। কিন্তু ইমরান সেই সাধারণ পেশাকে নিজের মেধা, সৃজনশীলতা আর অধ্যবসায়ে পরিণত করেছেন এক অসাধারণ উদ্যোগে।
ইমরান শুরু করেছিলেন খুব সাধারণভাবে—হাতে একটি ভুট্টার স্টল। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন নিজের কাজকে অন্যদের থেকে আলাদা করতে। সেই চেষ্টাতেই শুরু হয় তার মসলার গবেষণা। সময়ের সাথে সাথে তিনি তৈরি করেন ২৬ ধরনের ভিন্ন মসলা, যা ভুট্টার সঙ্গে মিশে তৈরি করে এক অনন্য স্বাদ। এই স্বাদের কারণেই মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম।
তার স্টলে প্রতিদিন নানান বয়সী মানুষ ভিড় করে শুধু এই বিশেষ স্বাদের ভুট্টার জন্য। অনেকের ভাষায়, ইমরানের তৈরি ভুট্টা খেলে মনে হয় যেন একেকটি স্বাদের নতুন অভিজ্ঞতা। মসলার ঘ্রাণ, ভুট্টার নরম স্বাদ, আর ইমরানের নিজস্ব হাতের ম্যাজিক—সব মিলিয়ে তার ভুট্টা হয়ে উঠেছে মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষে।
ইমরান শুধু ২৬ মসলার ভুট্টাই নয়, আরও বিভিন্ন স্বাদের আইটেম তৈরি করে নিজের স্টলকে করেছেন বৈচিত্র্যময়।
শুরুটা ছিল কঠিন। পুঁজি ছিল কম, সুযোগও ছিল সীমিত। তবুও তিনি থামেননি। প্রতিদিন ভোরে উঠতেন, ভুট্টা সংগ্রহ করতেন, মসলা প্রস্তুত করতেন—আস্তে আস্তে তার হাতের স্বাদ ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মাঝে। এখন তিনি নিজেই নিজের সাফল্যের গল্প।
মানুষ তাকে চেনে তার ভদ্র ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ আর অনন্য স্বাদের জন্য। তার স্বপ্ন—এই ব্যবসাকে আর বড় করা, নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করা, যাতে তার ভুট্টার নাম শুধু এক এলাকার নয়, সবার কাছে পৌঁছে যায়।
ইমরানের গল্প শেখায়—পরিশ্রম করলে সাধারণ একটি কাজও অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে। আর মানুষের ভালোবাসাই তার সবচেয়ে বড় অর্জন।















