( নীলফামারী ) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলায় জমি দখল, ভয়ভীতি, হামলা ও মামলায় সাধারণ মানুষকে হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী টাপুরচর এলাকায় এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এতে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, আব্দুল মোতালেব হোসেন পাঞ্চু মল্লিকের নেতৃত্বে একটি ভূমিদস্যু চক্র দীর্ঘদিন ধরে চরের সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন শতাধিক বিঘা জমি দখলের চেষ্টা করছে। দলিল জালিয়াতি, হুমকি-ধামকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তারা।

বক্তারা জানান, মোতালেব পাঞ্চুর ছেলে ফারুক হোসেন শেখ হাসিনার ওপর হামলার একটি মামলায় ৪৬ নম্বর আসামি ছিলেন। রাজনৈতিক সুরক্ষা পেয়েই তারা এলাকায় দুঃসাহসী হয়ে ওঠেন এবং হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে বহু পরিবারকে ঘরছাড়া করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।
ভুক্তভোগীরা জানান, বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় দখলচেষ্টা আরও বেড়ে গেছে। তাদের ভাষ্য, দিনের পর দিন হয়রানি ও হুমকির মুখে নিজের জমিতে কাজ করতে পারছেন না তারা। আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
ভুক্তভোগী কৃষক চান মিয়া বলেন, “বাপ-দাদার আমলের জমি। এখন এসে বলে জমি তাদের। কাগজ চাইলে হুমকি দেয়। মামলায় জড়িয়ে ঘরছাড়া করার ভয় দেখায়।”
গৃহবধূ কদভানু বেগম বলেন, “এই জমিই আমাদের জীবনের ভরসা। এটা কেড়ে নিলে আমরা পথে বসতে বাধ্য হবো। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ছাড়া উপায় নেই।”

মানববন্ধনে বক্তারা ঘোষণা করেন, “জমি দখলের নামে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি বন্ধ না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।” এ সময় তারা প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ, দখলদার চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং চরের জমির সঠিক পরিমাপ নিশ্চিতের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে উপস্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বলেন, “ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।”
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোতালেব হোসেন পাঞ্চু মল্লিককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মানুষ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তাদের স্লোগান ছিল, “ভূমিদস্যুদের অত্যাচার বন্ধ করো”, “হামলা-মামলা আর নয়”, “নিরীহ মানুষের জমি রক্ষা করো”।
এলাকাবাসীর আশা, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে। তারা চান, যেন আবার নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে এবং শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারে।














