কাউনিয়া উপজেলায় বিবাহিত এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে হারাগাছ থানা পুলিশ। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে গ্রেফতার তিনজনকেই রংপুর আদালত সোপর্দ করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের উদয়নারায়ণ মাছহারি এলাকার এজাহারুল ইসলামের ছেলে আজম আলী (১৯) এবং তার জামাই কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর আন্ধারীঝার হারেটকুঠি এলাকায় আব্দুল মজিদের ছেলে শামীম হোসেন (২৩) ও সারাই ইউনিয়নের ধুমেরকুঠি পশ্চিমপাড়ার মৃত মাহফুজুর রহমানের ছেলে সিয়াব বাবু বানিয়া বাবু (২৬)
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শনিবার রাতেই রংপুর মেট্রোপলিটন আমলী আদালত-১ এর বিচারক শোয়েবুর রহমানের কাছে শামীম ও সিয়াম বাবু নামের দুইজন ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম সোহেল।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত তথ্যের বরাত দিয়ে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার ওসি মমিনুল ইসলাম সোহেল জানান, ভিকটিম ওই নারী দিনাজপুর সদরের বাসিন্দা।
তার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন, পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাবর্তা বন্ধ ছিল, ঘটনার চারদিন আগে ওই নারী সঙ্গে ইমরান সেনাবহিনী নামে ফেসবুক আইডিতে শামীম হোসেনের পরিচয় হয়।
তাদের মধ্যে ইমুতে কথাবার্তা হয়, শামীম সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রতি দেন শামীম। গত ৫ মার্চ বুধবার বিকেলে ৩ টার দিকে ওই নারী তার ১৫ মাসের ছেলে সন্তানসহ স্বামীর গচ্ছিত ১১ লাখ টাকা নিয়ে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় উদ্দেশ্যে বের হয়।
পথে শামীম মোবাইলে ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রতি। শামীম ইমু ও মোবাইল নাম্বারে তাকে সারাই ইউনিয়নের ধুমেরকুঠি এলাকায় আসতে বলে। ওই নারী ঘটনাস্থলে পৌছিলে অজ্ঞাত এক যুবক তাকে ধূমেরকঠি এলাকায় একটি ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে যায়। পরে গভীররাতে ওই নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের পর টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
ভিকটিম নারীর স্বামী মুঠোফোনে জানান, ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী তাকে অজ্ঞাত মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়টি জানায়। তিনি ঘটনাস্থলে এসে স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি চান তিনি। রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম সোহেল বলেন, এ ঘটনায় ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে হারাগাছ থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করেন।
মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযুক্ত তিনজনকে সনাক্ত করে পুলিশ। পরে ১৮ এপ্রিল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সদর এলাকা থেকে শামীম ও আজম আলীকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে শনিবার ভোরে ধুমেরকুঠি এলাকা থেকে সিয়াম বাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনার আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।